প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মহাসুযোগ পেয়েছি আন্দোলনের মাধ্যমে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেশকে টেনে আনা, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশের ভেতর ও বাইরে। যেন আমরা এগোতে না পারি, যাতে সবকিছু ভেঙে পড়ে, আবার যেন গোলামিতে ফেরত যাই। যতদিন আছি দেশের কোনো অনিষ্ট কাজ আমাকে দিয়ে হবে না, নিশ্চিত থাকেন।
রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা বড় যুদ্ধাবস্থার ভেতরে আছি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পরে অস্থিতিশীলতা তৈরির যত চেষ্টা পারা যায়, করা হচ্ছে। এটা থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। বিভাজন থেকে আমাদের উদ্ধার পেতে হবে, ঐকমত্য থাকতে হবে। আত্মমর্যাদাপূর্ণ জাতি হিসেবে আমরা যতটুকু দাঁড়াতে পেরেছি, এটা যেন সামনের দিকে যায়। সবাই একসঙ্গে বসায় আমি মনে সাহস পেলাম। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে আমি নিজেকে অপরাধী অনুভব করব।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ড. ইউনূস জুনের ৩০ তারিখের পর আর একদিনও দায়িত্বে থাকবেন না। তিনি বলেন, “উনি এক কথার মানুষ। বারবার বলেছেন— ৩০ জুনের পর নির্বাচন যাবে না, এবং তিনি আর থাকবেন না।”
তিনি আরও জানান, “আমরা বর্তমানে একটি যুদ্ধাবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর দেশকে অস্থিতিশীল করার নানা অপচেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের গন্তব্য ঠিক রাখতে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরার জন্য প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
প্রেস সচিব জানান, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের তিনটি মৌলিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এই সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আজকের বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা ড. ইউনূসের উদ্যোগ ও রোডম্যাপের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন—জুন মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে নির্বাচন হবে। ১ জুলাইতে গড়াবে না। আমাদের সবাইকে এই রোডম্যাপকে বিশ্বাস করতে হবে। তিনি সময় মতো নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।”
প্রেস সচিবের ভাষায়, “এই সরকার সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন—এই তিনটি লক্ষ্যেই কাজ করছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই লক্ষ্যগুলো পূরণ হলে জনগণের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হবে।”