পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে গত মধ্যরাতের পর ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে ভারত যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে তার জের ধরে ভারতের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে ইসলামাবাদ দাবি করেছে। তবে এই ঘটনার কোনো ছবি বা ভিডিও যেমন এখনো সামনে আসেনি, তেমনি ভারতের পক্ষ থেকেও বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার কিছুই করা হয়নি– ফলে এই বক্তব্য নিয়ে বেশ অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে।
ভূপাতিত হয়ে থাকলেও ঠিক কতগুলো বিমান সেই পরিণতির মুখে পড়েছে এবং কোথায় তা ঘটেছে– তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
ইতিমধ্যে ভারতের প্রথম সারির সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’ এদিন সকালে জম্মু ও কাশ্মীরে তিনটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত হওয়ার কথা রিপোর্ট করলেও পরে সেই রিপোর্টটি তাদের পেজ থেকে তুলে নিয়েছে। মুছে দেওয়া হয়েছে এই সংক্রান্ত টুইট-টিও। ফলে বিমান ভূপাতিত হওয়ার দাবিকে ঘিরে জল্পনা যথারীতি আরও বেড়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স বা সুপরিচিত সংবাদপত্র দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস একাধিক ভারতীয় বিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর প্রকাশ করেছে – এবং তা থেকে এখনো সরে আসেনি।
রয়টার্স ভারত-শাসিত কাশ্মীরে তিনটি এবং দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ভারত ও ভারত-শাসিত কাশ্মীর মিলিয়ে অন্তত দুটি বিমান ধ্বংস হওয়ার কথা জানিয়েছে।
এদিকে ভারতের সামরিক বাহিনীর সূত্রকে উদ্ধৃত করে বুধবার দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, “অপারেশন সিন্দুরে অংশ নেওয়া ভারতের সব বৈমানিক (পাইলট) নিরাপদ আছেন।’
পাইলটরা নিরাপদ থাকলেও বিমানগুলো সব নিরাপদ আছে কি না, ভারত সে ব্যাপারে কিছু বলছে না কেন অনেকে সে প্রশ্নও তুলছেন।
ভারতের পাঁচটি জেট ফাইটার ভূপাতিত করার কথা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে প্রথম বলেন সে দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী তথা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইশাক দার।
তবে তিনি তখন এর বেশি কিছু বিস্তারিত জানাননি – যদিও পরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগের (আইএসপিআর) মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী দাবি করেন এই পাঁচটি ভূপাতিত বিমানের মধ্যে তিনটি অত্যাধুনিক রাফাল, একটি সুখোই ও একটি মিগ-২৯।
এরপর সন্ধ্যার দিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও দেশটির পার্লামেন্টে জানান, তার দেশের নিরাপত্তা বাহিনী গুলি করে পাঁচটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করেছে। তিনি বলেন, “এর মধ্যে দুটি কাশ্মীরে এবং একটি ভারতের ভাতিন্ডায় ভূপাতিত হয়েছে।”
পার্লামেন্টে শেহবাজ শরীফ আরো দাবি করেন, “ভারত গত রাতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে আক্রমণ চালিয়েছিল যেখানে তাদের ৮০টি বিমান অংশ নেয়।”
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিধ্বস্ত ভারতীয় বিমানের মধ্যে তিনটি রাফাল বিমানও ছিল। ভারত তার রাফাল বিমানের জন্য ‘খুবই গর্বিত’ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মি. শরীফ বলেন, “পাকিস্তান ভারতের পরিকল্পনা সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত ছিল। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী প্রস্তুত ছিল যে ভারতের বিমান কখন উড়বে এবং কখন তারা সেগুলো তুলে সমুদ্রে ফেলে দেবে!”