People Voice
গণমাধ্যম

বাংলাদেশে গুজব শুধু ভারত থেকে আসে, এ রকম না: মাহফুজ আলম

গত জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকে অনেকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে না পেরে গুজব এবং অপতথ্য ছড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে যে গুজব–অপতথ্য আছে, সেটা শুধু সেন্ট্রালি বা ভারত থেকে আসে, এ রকম না। এখনো আমরা যেটা দেখতে পাচ্ছি, গ্রামাঞ্চলে অনেকেই এখনো আছেন, যাঁরা গত জুলাই–আগস্টের যে গণ–অভ্যুত্থান, এটা তাঁরা মনেপ্রাণে মেনে নেন নাই।’

আজ রোববার দুপুরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘ডিজিটাল ভেরিফিকেশন অ্যান্ড ফ্যাক্টচেকিং–বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মো. মাহফুজ আলম।

গুজবের প্রকারভেদ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘ওখান (গ্রামাঞ্চল) থেকে এমনভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে মনে হচ্ছে, এই ইভেন্ট কোনো দিন ঘটে নাই; বরং এখানে একটা উল্টো ঘটনা ঘটছে। স্টুডেন্টরাই মূলত পুলিশকে মেরে ফেলছে এবং স্টুডেন্টরা আসলে জোর করে ক্ষমতা দখল করছে। এ রকম কিছু বয়ান আপনারা দেখবেন স্থানীয় জায়গা থেকে আসতেছে।’

প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমি বলছি না আপনারা পলিটিক্যাল জায়গা থেকে এটাকে ডিল করেন। কিন্তু যেটা মিথ্যা তথ্য এবং অপতথ্য, এটা আপনাদের মোকাবিলা করতে হবে এবং এটার সাথে ধর্মীয় কিছু ইস্যু আছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের সমাজে যেহেতু ধর্মীয় একটা আবেগ আছে মানুষের ভেতরে। ওই আবেগকে পুঁজি করে অনেক সময় অনেক কর্মকাণ্ড হয়, যেটা হচ্ছে স্থানীয় জেলা বা অঞ্চলগুলোতে। সেখানে আমি মনে করি, তথ্য অফিসারদের শক্ত ভূমিকা নেওয়ার আছে।’

স্থানীয় পর্যায়ে তথ্য কর্মকর্তাদের কাজের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘একটা অপতথ্য বা একটা মিথ্যা নিউজ শুধু একজন ব্যক্তির ক্ষতি করে না; বরং একটা সোসাইটির পুরো ফেব্রিকটা নষ্ট করে দেয় এবং খুব ধীরগতিতে হলেও বাংলাদেশে এটা শুরু হয়েছে এবং আমি মনে করি, আরও দিন যত যাবে, এটি বাড়তে থাকবে। তো এই ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা নেওয়ার আছে এবং সরকারকে সহযোগিতা করার দরকার আছে, যাতে সোশ্যাল আনরেস্ট এবং ধর্মীয় জায়গা থেকে যেন সহিংসতা বা হানাহানি না তৈরি হয়।’

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সংবাদমাধ্যম যত বেশি প্রশ্ন করবে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলরা তত বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল হবেন। অতএব সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্ন করতেই হবে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ সবকিছু লিখতে পারে। সংবাদমাধ্যমকে অবশ্যই প্রশ্ন করতে হবে।  সংবাদমাধ্যম যত বেশি প্রশ্ন করবে রাষ্ট্রে যারা দায়িত্বশীল আছেন, তারা আরও বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করতে বাধ্য হবেন।  সুতরাং সংবাদ মাধ্যমকে প্রশ্ন করতেই হবে, প্রশ্ন তুলতেই হবে।’

মাহফুজ আলম বলেন, স্বৈরাচার সরকারের সময়ের গণমাধ্যমগুলোর কার্যকলাপ নিয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দরকার। বাংলাদেশের মিডিয়ায় অ্যাকাউন্টেবিলিটি দরকার। সাংবাদিকতার জন্য করা সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নযোগ্য। পর্যালোচনা চলছে, সেটা করার চেষ্টা করছি।

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ তার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মিসইনফো এবং সাইবার ক্রাইমের শিকার হবে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পর যে ‘ডিজইনফরমেশন’ ও ‘মিসইনফরমেশন’ ক্যাম্পেইনটা হয়েছে, সেটা হয়েছে দেশের ভেতরের ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী ও দেশের বাইরের গোষ্ঠীগুলোর যৌথ প্রয়াসে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘একদল লোক বসে আছে এই সরকারকে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার জন্য। সরকারের সংস্কার কার্যক্রমগুলো তাদের সহ্য হচ্ছে না। কারণ, তারা এত খারাপ কাজ করে গেছে যে কাজগুলোকে আড়াল করার জন্য এই সরকারকে সরাসরি তারা প্রতিপক্ষ মনে করছে। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব বিষয়ে করণীয় দিকগুলো আপনারা শিখতে পারবেন।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা নিজামূল কবীর, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা।

Related posts

এখনো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হচ্ছে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়: কামাল আহমেদ

News Desk

ভালো আছেন ফরিদা ইয়াসমিন, চেয়েছেন দোয়া

fz@admin