পোশাকের ওপর সুতা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে ছোট্ট বোতামটি। দেখতে নিরীহ মনে হলেও, এই অনুষঙ্গটির কাজ অনেক। পোশাকের নানা অংশকে একে অপরের সঙ্গে আটকে রাখার পাশাপাশি সৌন্দর্যও বাড়িয়ে তোলে। অনেক সময় প্রয়োজন না থাকলেও শুধু সজ্জার জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে বোতামকে।
এটি পরিচিত শো বোতাম হিসেবে। ভিন্নধর্মী নকশার বোতাম পোশাকে আনে বৈচিত্র্য। তবে শুধু পোশাকই নয়, ব্যাগ, জুতা এমনকি গয়নাতেও দেখা যাচ্ছে বোতামের ব্যবহার।
পোশাকের ধরন আর উপকরণ অনুযায়ীও বেছে নেওয়া হয় বোতাম। আজকাল জমকালো পোশাকে জারদৌসির কাজ করা বোতাম ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান ডিজাইনার সাফিয়া সাথী। এ ছাড়া পোশাকের নকশায় ভারী কাজ থাকলে দেখা যায় সোনালি ও রুপালি রঙের ধাতব বোতাম। এ ধরনের বোতামের ব্যবহার পোশাকে আনে আভিজাত্য।
প্লাস্টিকের বোতাম পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। পরিবেশের ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে নতুন প্রজন্মের ডিজাইনাররা বেছে নিচ্ছেন পরিবেশবান্ধব উপাদানে তৈরি বোতাম। ব্যবহার করছেন শামুক-ঝিনুকের বোতাম, নারকেলের খোলের বোতাম, কাঠের বোতাম ও কাপড়ের বোতাম। এসব বোতাম একই সঙ্গে টেকসই ও নান্দনিক। অনেক ডিজাইনার বোতামের পুনর্ব্যবহারের ওপরও জোর দিচ্ছেন।
বোতামের ওপর কাপড় পেঁচিয়ে ব্যবহারের প্রচলনও বেশ পুরোনো। একসময় যেকোনো কাপড়ই বোতামে জড়িয়ে নেওয়া হতো, তবে আজকাল সেই কাপড়ের বোতামের নকশাতেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কাপড়ের বোতামেও করা হচ্ছে হাতের কাজ ও স্ক্রিন প্রিন্ট। এসব বোতামে কাপড়ের ভেতর থাকছে তুলা অথবা নারকেলের খোল।
এ ছাড়া আমাদের ঐতিহ্যবাহী নকশিকাঁথার নকশা করা বোতামের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে দেশীয় পোশাকে। বাজার ঘুরে দেখা গেল বোতামের আকৃতিতেও এসেছে নতুনত্ব। প্রচলিত গোল আকৃতির বোতামের পাশাপাশি এখন দেখা মিলছে বর্গাকৃতি, ত্রিভুজ আকৃতি, ষড়ভুজ আকৃতি, পাতার আকারসহ বিভিন্ন ধরনের বোতাম।
কারুকার্যখচিত দস্তা খাদের তৈরি বোতাম ব্যবহার করা হচ্ছে শার্টের হাতায়। নারীদের পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকে সাধারণ আকারের চেয়ে কিছুটা বড় আকারের বোতাম ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব বোতামে দেখা মিলছে বিভিন্ন ধরনের পুঁতি ও পাথরের। শো বোতাম হিসেবে ঝুমকার মতো বোতামের দেখাও মিলছে।