‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। দলটির চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। মহাসচিব শওকত মাহমুদ।
শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নতুন রাজনৈতিক দলটির আত্মপ্রকাশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। দলটির স্লোগান ‘গড়বো মোরা ইনসাফের দেশ’।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা ও ইশতেহার পাঠ করেন শওকত মাহমুদ। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে শওকত মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রতিটি গণ-অভ্যুত্থান, বিপ্লব ও আন্দোলনের পরে সেসব সংগ্রামী চেতনায় নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের অভ্যুদয় ঘটে। যেহেতু রাষ্ট্র সাজবে একাত্তর ও চব্বিশের গণ-জাগরণের চেতনায়, সেই আঙ্গিকে নতুন দলের আবির্ভাব অনিবার্য।
জাতির এই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতীয় প্রত্যাশায় সব প্রকার বৈষম্য, ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে জনকল্যাণ, ইনসাফ, সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এবং গর্বিত জাতীয়তাবোধ দৃঢ় করতে তাঁরা আজ নতুন দলের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিচ্ছেন।
শওকত মাহমুদ বলেন, ‘গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং সব ধরনের বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমরা এই দল গঠন করছি। মুক্তিযুদ্ধ, ৭ নভেম্বরের জাতীয় বিপ্লব, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভুত্থানে অনুপ্রাণিত হয়ে জনতা পার্টি বাংলাদেশের ব্যানারে আমাদের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক রাজনৈতিক কর্তব্য হলো—ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার মধ্য দিয়ে আগামীর বাংলাদেশের ভিত্তি গড়ে তোলা। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলায় আমাদের লক্ষ্য।’শিগগিরই নির্বাচন কমিশনে দলের গঠনতন্ত্র, লোগো, নির্বাচনী প্রতীক ও পতাকা জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

‘গড়বো মোরা ইনসাফের দেশ’ স্লোগান নিয়ে দলটি তাদের ২৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেছে এবং নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, আইনজীবী, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা ও সাবেক আমলাসহ বিভিন্ন পেশা থেকে যোগ দেওয়া নেতাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘নিরাপদ সড়ক চাই-এর মাধ্যমে আমি যেমন সততার সঙ্গে এদেশের মানুষের জন্য কাজ করেছি, ঠিক তেমনি এই রাজনৈতিক প্লাটফর্মের মাধ্যমে সততা নিয়ে জাতির সেবা করতে চাই।’
রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘৩২ বছর ধরে সড়ক নিরাপত্তার জন্য কাজ করেছি, সরকারের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা ছাড়াই। তবে এখন বুঝতে পারি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও রাষ্ট্রের সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের পরিবর্তন সম্ভব নয়।’